Thursday, September 28, 2017

অতৃপ্ত গোনাহ


গোনাহ করতে করতে হাফিয়ে গিছেন, গোনাহ করতে আর ভাল লাগে না তবুও অভ্যাস এর জন্য গোনাহ না করে পারেন না। মানুষ আসলেই অভ্যাস এর দাস, মানুষ প্রতিনিয়ত যেই গোনার মধ্যে থাকে সেটা এমন ভাবে শইতান তাকে অভ্যাসের মধ্যে বেঁধে ফেলে যে, সেটা থেকে সরে আসতে পারে না মানুষ। তার পরও মাঝে মাঝে এই গোনাহ টার ওপর একটা বিতৃষ্ণা চলে আসে, মনের মধ্যে একটা অশান্তির সৃষ্টি হয়। গোনাহ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে ইচ্ছা হয়। কিন্তু সুযোগ সুবিধা না হয়ে বা কেমনে গোনাহ থেকে দূরে থাকা সম্ভব না বুঝবার কারনে একই গোনাহে আবার লিপ্ত হতে হয়। আমি অনেক বড় গোনাহর কথা বলছি না । ছোট ছোট গোনাহ মনে করে মানুষ কিন্তু যেগুলোর কারনে বড় গোনাহ এর সুত্রপাত হয়। যেমন ধরুন, রাস্তা দিয়ে সুন্দরী একটা মেয়ে যাছে, আপনি তাকে স্ক্যান করে মাথাই সেভ করে রেখে দিচ্ছেন। যদিও আপাত দৃষ্টিতে অনেক বড় কিছু মনে না হলেও ওই স্ক্যান হওয়া ছবি টাই আপনি আপনার অবচেতন মনকে দিয়ে কোন না কোন সময় ভাবাবেনই। মনে মধ্যে কত শত ভাবনার সৃষ্টি হবে, যেহেতু শইতান আপনাকে এটা ভাবাবে সুতরাং ভাল কিছু ভাবাবে না এটা ১০০% নিশ্চিত আর তখনই আপনার দিয়ে গোনাহ এর কাজ সংঘটিত হতে পারে। কি হত যদি মেয়ে টাকে না দেখতেন, আপনার তো অনুমতি ছিল না দেখবার। এই রকম কত শত গোনাহ আছে আরও কিছু উদাহরণ দেই মসজিদের সামনে দাড়িয়ে আছেন,আযান শুরু হল, তো শইতান আপনাকে বোঝাবে জামাত শুরু হতে ১৫মিনিট এখনও বাকি আছে তো এই ১৫মিনিট কি নষ্ট করবা বরং বাসাই যেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে বাসাই নামাজ টা পড়ে নিও আমরাও সেটাই বুঝি বাসাই যেয়ে একটু রেস্ট করি এই রেস্ট ওয়াক্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আর শেষ হয় না, শইতান আমাদের ভুলিয়ে রাখে। আবার ধরুন আপনি একটা বিষয়ে কারও থেকে শুনছেন যদিও সত্য মিথ্যা জানেন না তো যতটুকু জানেন সেটা যাচাই না করেই অন্যকে বলে বেড়ান। যাই হোক , আমরা অনেক বড় গোনাহ করি বটে কিন্তু সবার চক্ষু আড়ালে, এমন কথা নাইবা লিখলাম, কিন্তু গোনাহ তো করি আমরাই... কেও না দেখুক একজন কিন্তু ঠিক এ দেখেন সব কিছু। লিখাটার কারণ এটা না মানুষকে তার গোনাহর  কথা সরণ  করিয়ে দেওয়া বরং যাদের মন গোনাহ থেকে বাচবার জন্য আকুল হয়ে আছে কিন্তু  পারছে না তাদের জন্যই লিখাটা। আপনাকে একটা খুব পরিচিত প্রতিষ্ঠান এর কথা বলবার জন্যই লিখা টা, এমন একটা প্রতিষ্ঠান যেখানে আল্লাহর লিখা বই পড়ে শোনানো হয়,যেখানে গেলে মন এমনি শান্ত হয়ে যাই। আপনি হইত গোনাহ করতে করতে হাফিয়ে গিছেন তবে জানেন কি আপনার আল্লাহ রহমত আপনার প্রতি এখনও শেষ হয় নাই এই জন্য আপনার মন টা আকুল হয়ে থাকে গোনাহ থেকে বাঁচবার জন্য। আল্লাহ আপনাকে তার ঘরে ডাকবার জন্য বলে হাইয়্যা আলাল ফালাহ্- অর্থাৎ তোমরা সাফল্যের দিকে ছুটে এসো । তবুও কি আমরা আসি বলেন ? যদি আল্লাহর সাথে সম্পর্ক করতে যাই তবে আল্লাহর ঘরে যেয়েই করতে হবে । শাইতান আপনাকে ভাল ভাল কাজে বেস্ত করে দিবে তবুও আপনি যেন কোন ভাবেই মসজিদ মুখী না হতে পারেন সে জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাবে... কেন জানেন, শইতান সব কিছু মেনে নিবে কিন্তু আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক হয়ে যাবে এটা কখনও মেনে নিবে না, আল্লাহর ঘোষণানিশ্চয় নামাজ যাবতীয় অন্যায় ওঅশ্লীল-অপকর্ম থেকে বিরত রাখে(সূরা আনকাবুত: ৪৫)। মহান আল্লাহ চান বান্দা মসজিদ মুখী হবে ,আল্লাহর সাথে সম্পর্ক করবে,এই জন্য বার বার আযান এর সময় বলা হয় হাইয়্যা আলাছ ছালাহ্ অর্থাৎ তোমরা নামাযের দিকে ছুটে এসো। কিন্তু আমরা অধম এক কান দিয়ে শুনি আর অন্য কান দিয়ে তা বার করে দেই।
 আযান শয়তানকে তাড়িয়ে দেয়। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
যখন সালাতের আযান দেওয়া হয়, তখন শয়তান বাতকর্ম করতে করতে পিছু হটতে থাকে, যেন সে আযান শুনতে না পায়। যখন আযান শেষ হয় নিকটবর্তী হয়, যখন ইকামত আরম্ভ হয় সে পিছু হটে, ইকামত শেষ হলে সে আগমন করে এবং ব্যক্তি ও তার অন্তরের মাঝে বিভিন্ন কথা ও ভাবনার উদ্রেক করে, সে বলে: এটা স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর, ইতোপূর্বে যা কখনো তার মনে হয় নি। এক সময় এমন হয় যে, সে সালাতের রাকাত সংখ্যা ভুলে যায় (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০৮)

আযান এর যদি আল্লাহ এত বেশি ক্ষমতা দিয়ে থাকেন তবে বান্দা যদি আযান এর উত্তর দিতে দিতে মসজিদে যেয়ে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে তাহলে শাইতান না জানি কত দূরে থাকবে ওই আল্লার বান্দা থেকে। মানুষ এর পাপ করার ক্ষমতা আল্লাহ দিছেন , মানুষ তার সহজাত প্রবৃত্তির জন্যই পাপ করে ফেলে। বান্দা যখন বুঝবে আর তউবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে যাবে অবশই আল্লাহ তাকে কবুল করে নিবেন। 

No comments:

Post a Comment

Blog Stats